স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর আমের চাহিদা ভাল থাকায় ২০১৬ সালে রাজশাহীর আম বিদেশে রপ্তানি শুরু হয়। প্রথমবছরের পর রপ্তানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে গেলেও এবার অন্তত ২০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে।
এরই মধ্যে গত শুক্রবার রাতে রাজশাহীর বাঘা থেকে ৩ হাজার কেজি আম পাঠানো হয়েছে। সেদিন রাজশাহীর হিমসাগর আম নামানো শুরু হয়। আর এ দিনই বিদেশে আম পাঠানো শুরু হয়। বাঘার আম চাষিদের ২০ সদস্যের একটি সমিতি গত তিন বছর ধরে রপ্তানিকারকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আম উৎপাদন করে। ভাল পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা এসব আম বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাঁদের সহায়তা করেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০০ টন আম রপ্তানি করবে। বেসরকারি এই সংগঠনটির সঙ্গে কৃষি বিভাগ যোগাযোগ করে সবকিছু ঠিক করেছে। জেলায় রপ্তানিযোগ্য আমও উৎপাদন হচ্ছে। এসব আম ইউরোপের জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও সুইজারল্যান্ডে যাবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন সারাদেশ থেকে মোট ৫০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করবে। এর মধ্যে রাজশাহী থেকে নেয়া হবে ২০০ টন। এ জন্য সংগঠনটি রাজশাহীর ২০ জন চাষির সঙ্গে চুক্তিও করেছে।
বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী থেকে ২০০ মেট্রিক টন আম নেয়ার চুক্তি করলেও জেলায় এর চেয়েও বেশি রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন হবে। রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটির নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা প্রায় ৫ লাখ আম ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে চাষ করেছেন। সংগঠনটির আশা অন্তত ৫০০ টন রপ্তানিযোগ্য আম তাঁরা উৎপাদন করবেন। এর মধ্যে ৩০০ টন রপ্তানি করতে চান তাঁরা।
রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনোয়ারুল হক এবার ৫০ হাজার আমে ব্যাগিং করেছেন। প্রতিটি আমের জন্য এতে খরচ পড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমরা আশায় বুক বাঁধছি যে আম রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’
আনোয়ারুল ইসলাম আরও জানান, তাঁদের সংগঠনে সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। কিন্তু গত কয়েকবছরে আম রপ্তানি না হওয়ায় সবাই এখন আর ব্যাগিং করতে উৎসাহ পাননি। এ বছর বড়জোর ১৫ জন ব্যাগিং করেছেন।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়াল বলেন, প্রাথমিকভাবে ২০০ টন আম নিতে ২০ জন চাষি বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও তাঁরা এত আম দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। তাই অন্য চাষিদেরও আম দেয়ার সুযোগ থাকবে। তিনি আরও জানান, চাষিরা এক কেজি আমের জন্য সর্বনিম্ন ৭৫ টাকা থেকে একশো’র বেশি দাম পাবেন। গড়ে ১০০ টাকা দাম ধরলে রাজশাহীর অন্তত দুই কোটি টাকার আম রপ্তানি হবে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.